১০:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫, ১০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইজরালি হামলায় গাজায় ভয়াবহ বিপর্যয় জাতিসংঘের উদ্বেগ প্রকাশ ।

  • জনমত ডেস্ক
  • সময়: ০১:৫৪:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫
  • ২৯

২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে যে মানবিক বিপর্যয় ঘটেছে, তার একটি বিস্তারিত চিত্র নিচে তুলে ধরা হলো। [জনমত নিউজ_২৪]

হতাহতের সংখ্যা এবং উৎস

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৬২,৬২২ জন ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ১৫৭,৬৭৩ জন। এই ভয়াবহ পরিসংখ্যানের একটি বড় অংশই হলো শিশু ও নারী।

* শিশুদের মৃত্যু: বহু রিপোর্টে দেখা গেছে যে, নিহতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যকই শিশু। জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ (UNICEF) জানিয়েছে, গাজায় শিশুদের মৃত্যুহার অত্যন্ত alarming, যা আধুনিক যুদ্ধে বিরল।

* নারী ও বেসামরিক নাগরিক: নিহতদের মধ্যে অনেক নারী রয়েছেন, যারা নিজেদের পরিবার ও শিশুদের দেখাশোনা করছিলেন। আল জাজিরা এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তদন্তে উঠে এসেছে যে, নিহতদের প্রায় ৮৩% বেসামরিক নাগরিক। ইসরায়েলের নিজস্ব সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার ফাঁস হওয়া তথ্য থেকেও এই পরিসংখ্যানের মিল পাওয়া গেছে, যা আধুনিক যুদ্ধের ইতিহাসে একটি ব্যতিক্রমী উচ্চ বেসামরিক মৃত্যুর হার।

মানবিক সংকট

শুধু হতাহতের সংখ্যাই নয়, এই আগ্রাসন গাজায় এক ভয়াবহ মানবিক সংকট সৃষ্টি করেছে।

খাদ্য সংকট ও দুর্ভিক্ষ: ইসরায়েলি অবরোধের কারণে গাজার বেশিরভাগ মানুষ তীব্র খাদ্য সংকটে ভুগছেন। অসংখ্য শিশু অপুষ্টি ও অনাহারে মারা যাচ্ছে। মানবিক সাহায্য সংস্থাগুলো বারবার সতর্ক করেছে যে, গাজায় দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।

স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পতন: গাজার হাসপাতালগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে বা অকার্যকর হয়ে পড়েছে। আহতদের চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত চিকিৎসা সামগ্রী, ওষুধ ও চিকিৎসক নেই। এতে আহতদের মধ্যে অনেকেরই মৃত্যু হচ্ছে, যা চিকিৎসা পেলে হয়তো এড়ানো যেত।

অবকাঠামো ধ্বংস: ইসরায়েলি হামলায় গাজার প্রায় সব অবকাঠামো—বাড়িঘর, স্কুল, হাসপাতাল এবং রাস্তাঘাট—ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়েছে। এর ফলে গাজার ৮০% এরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে অস্থায়ী শিবিরে বা খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন।

এই পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। তারা অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি, নিরবচ্ছিন্ন মানবিক সাহায্য প্রবেশ এবং বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য বারবার আহ্বান জানিয়েছে।

ট্যাগ :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

জনপ্রিয় খবর

শীঘ্রই আসছে জনমত নিউজ ২৪

চাঁদাবাজ ও সন্ত্রা/সীদের বিরুদ্ধে আরেকটি যুদ্ধ করতে হবে: ড. হেলাল উদ্দিন (ঢাকা -৮)

ইজরালি হামলায় গাজায় ভয়াবহ বিপর্যয় জাতিসংঘের উদ্বেগ প্রকাশ ।

সময়: ০১:৫৪:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫

২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে যে মানবিক বিপর্যয় ঘটেছে, তার একটি বিস্তারিত চিত্র নিচে তুলে ধরা হলো। [জনমত নিউজ_২৪]

হতাহতের সংখ্যা এবং উৎস

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৬২,৬২২ জন ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ১৫৭,৬৭৩ জন। এই ভয়াবহ পরিসংখ্যানের একটি বড় অংশই হলো শিশু ও নারী।

* শিশুদের মৃত্যু: বহু রিপোর্টে দেখা গেছে যে, নিহতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যকই শিশু। জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ (UNICEF) জানিয়েছে, গাজায় শিশুদের মৃত্যুহার অত্যন্ত alarming, যা আধুনিক যুদ্ধে বিরল।

* নারী ও বেসামরিক নাগরিক: নিহতদের মধ্যে অনেক নারী রয়েছেন, যারা নিজেদের পরিবার ও শিশুদের দেখাশোনা করছিলেন। আল জাজিরা এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তদন্তে উঠে এসেছে যে, নিহতদের প্রায় ৮৩% বেসামরিক নাগরিক। ইসরায়েলের নিজস্ব সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার ফাঁস হওয়া তথ্য থেকেও এই পরিসংখ্যানের মিল পাওয়া গেছে, যা আধুনিক যুদ্ধের ইতিহাসে একটি ব্যতিক্রমী উচ্চ বেসামরিক মৃত্যুর হার।

মানবিক সংকট

শুধু হতাহতের সংখ্যাই নয়, এই আগ্রাসন গাজায় এক ভয়াবহ মানবিক সংকট সৃষ্টি করেছে।

খাদ্য সংকট ও দুর্ভিক্ষ: ইসরায়েলি অবরোধের কারণে গাজার বেশিরভাগ মানুষ তীব্র খাদ্য সংকটে ভুগছেন। অসংখ্য শিশু অপুষ্টি ও অনাহারে মারা যাচ্ছে। মানবিক সাহায্য সংস্থাগুলো বারবার সতর্ক করেছে যে, গাজায় দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।

স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পতন: গাজার হাসপাতালগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে বা অকার্যকর হয়ে পড়েছে। আহতদের চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত চিকিৎসা সামগ্রী, ওষুধ ও চিকিৎসক নেই। এতে আহতদের মধ্যে অনেকেরই মৃত্যু হচ্ছে, যা চিকিৎসা পেলে হয়তো এড়ানো যেত।

অবকাঠামো ধ্বংস: ইসরায়েলি হামলায় গাজার প্রায় সব অবকাঠামো—বাড়িঘর, স্কুল, হাসপাতাল এবং রাস্তাঘাট—ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়েছে। এর ফলে গাজার ৮০% এরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে অস্থায়ী শিবিরে বা খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন।

এই পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। তারা অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি, নিরবচ্ছিন্ন মানবিক সাহায্য প্রবেশ এবং বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য বারবার আহ্বান জানিয়েছে।